নবান্ন স্কলারশিপ ও ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ 2023 – Nabanna Scholarship and Aikyashree 2023
![]() |
নবান্ন স্কলারশিপ ও ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ 2023 |
Sarkari Chakri
নমস্কার বন্ধুরা –
কথায় বলে ইচ্ছে থাকলে, উপায় হয়। কথাটি বাস্তব সত্য। তার নমুনা মিলল একেবারে হাতে নাতে । তবে নগদে নয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। কন্যাশ্রী, রুপোশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী, সবুজ সাথী থেকে শুরু করে স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড। রাজ্যের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই একাধিক জনমুখি প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের সাধারণ মানের ছাত্র- ছাত্রী অর্থাৎ পড়ুয়াদের জন্য স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড তো ছিলই। মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পার হওয়া সাধারণ মানের ছাত্র- ছাত্রীরা স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের সুবিধা তো পাচ্ছেনই তার ওপর এক ধাপ এগিয়ে গত কয়েক মাস আগেই রাজ্যের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সুবিধার্থে মুখ্যমন্ত্রীর মা, মাটি মানুষের সরকার চালু করেছে স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ। ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রায় ৮ লক্ষ উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ পড়ুয়া স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ বা বৃত্তির টাকা পেয়েছেন।
তবে শেষ হইয়াও বুঝি হইল না শেষ। এর কারণ টা অবশ্য বেশ স্পষ্ট । আসলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরবরাই জনদরদি বটে । বিশেষ করে রাজ্যের পড়ুয়াদের সাহায্যের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর জুড়ি মেলা ভার। তাঁর লক্ষ্য একটাই, কিভাবে রাজ্যের মেধাবী পড়ুয়ারা উচ্চতর শিক্ষা অর্জন করে সমাজ জীবনে ভালো ভাবে প্রতিষ্ঠা পাই। তাই উচ্চ শিক্ষা এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিজেই নিজের ত্রান তহবিল থেকে ইতিমধ্যেই মেধাবী পড়ুয়াদের জন্য স্কলারশিপ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বিগত কয়েক বছর ধরে গোটা রাজ্যের প্রান্তিক দুঃস্থ মেধাবী ছাত্র- ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের আর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকেন।
ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্যের দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়াদের আর্থিক আর্থিক ভাবে সহায়তা প্রদান করতে নিজেই নিজের তহবিল থেকে চালু করেছেন নবান্ন স্কলারশিপ । তবে এই স্কলারশিপ অবশ্য স্থান ভেদে দু-রকম নামে পরিচিত যেমন দক্ষিণ বঙ্গের ছাত্র – ছাত্রী পড়ুয়াদের জন্য এটি নবান্ন স্কলারশিপ আবার উত্তর বঙ্গের জন্য এটি উত্তর কন্যা স্কলারশিপ নামে পরিচিত । কিন্তু স্থান ভেদে আলাদা নামের সাযুজ্য থাকলেও স্কলার শিপের আবেদন – নিয়মাবলী থেকে শুরু করে টাকার অংক কিন্তু একেবারে সমান । অর্থাৎ উত্তর হোক বা দক্ষিণ এই স্কলার শিপের আওতায় রাজ্যের যে কোনও প্রান্তের পরুয়া কে একই নিয়মবিধি মানতে হবে বিলক্ষণ ।
তবে আর্থিক সুবিধা পাওয়ার রাস্তা এখানেই শেষ নয় আর আছে , যেমন আরও এক ধাপ এগিয়ে মাত্র কয়েক মাস আগেই রাজ্যের সংখ্যালঘু (Minority) ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার খরচ জোগানের পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা প্রদানের সুবিধার্থে মুখ্যমন্ত্রীর মা, মাটি মানুষের সরকার চালু করেছে ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ (Aikyashree scholarship)। ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রাথমিক পড়ুয়া থেকে শুরু করে স্নাতক পর্যন্ত পাঠরত সংখ্যালঘু ছাত্র- ছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের অঙ্গ হিসাবে বার্ষিক বৃত্তি বা স্কলারশিপ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। শিক্ষা দফতর সুত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, বিগত বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থ এবং শিক্ষা বর্ষের জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্যের সংশ্লিষ্ট স্কুল এবং কলেজে পাঠতরত সংখ্যালঘু ছাত্র- ছাত্রীদের কাছ থেকে আবেদন পত্র গ্রহনের কাজ শুরু হয়েছে।
উল্লেখিত নবান্ন এবং ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ দুটির ক্ষেত্রে আবেদন সহ যাবতীয় নিয়মবিধি জানতে চটপট চোখ বুলিয়ে নিন নিচের বিস্তারিত প্রতিবেদনে ।
প্রথমে জেনে নেওয়া যাক নবান্ন বা উত্তর কন্যা স্কলারশিপ সম্পর্কে –
নিচে দেওয়া হয়েছে নবান্ন স্কলারশিপ (NABANNA SCHOLARSHIP) এই নামের পিছনেও রয়েছে বিশেষ তাৎপর্য। কারণ এই স্কলারশিপের আর্থিক যাবতীয় আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব ফান্ড অর্থাৎ তহবিল থেকে। তার ওপর রাজ্যের দুই প্রান্তের দুই প্রধান প্রশাসনিক ভবন যেমন দক্ষিণ বঙ্গের ক্ষেত্রে নবান্ন এবং উত্তর বঙ্গের ক্ষেত্রে উত্তর কন্যা প্রশাসনিক ভবন থেকেই এই স্কলারশিপের টাকা যেমন দেওয়া হয় তেমনি এই স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনকারী পড়ুয়াকে বাসস্থান ভেদে ওই দুই স্থানে আবেদন করতে হয়।
এই স্কলারশিপ বা বৃত্তির আবেদনের ক্ষেত্রে কী কী প্রয়োজন ? আবেদনই বা কিভাবে করতে হবে ?
১. আবেদনকারী ছাত্র- ছাত্রীকে অবশ্যই এ রাজ্যের বাসিন্দা হতে হবে।
২. মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ক্যাটাগরি অনুযায়ী ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে
৩. যদি কোনও ছাত্র- ছাত্রী কারিগরি অর্থাৎ টেকনিক্যাল কোর্সে ভর্তি হতে চান কিংবা ওই বিষয়ে পড়াশোনা করছেন তাদের পড়াশোনার খরচ জোগাতেই এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়।
৪. এ ক্ষেত্রে আবেদনকারী পড়ুয়ার পারিবারিক বার্ষিক আয় হতে হবে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মধ্যে।
৫. একমাত্র অফলাইনেই আবেদন করা যাবে। এক্ষেত্রে অনলাইন প্রক্রিয়ায় আবেদনের কোনও সুযোগ নেই।
৬. আবেদন পত্রটি সাদা কাগজে টাইপ করে তার সঙ্গে যাবতীয় ডকুমেন্টস সহযোগে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পাঠাতে হবে।
৭. আবেদনকারী প্রার্থীকে তার আবেদন পত্রের সঙ্গে ব্যাঙ্কের পাশ বই -র যাবতীয় তথ্য এবং পারিবারিক আয়ের প্রমান পত্র পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট ঠিকানায়।
৮. নবান্ন বা উত্তর কন্যা স্কলারশিপে দুঃস্থ মেধাবী ছাত্র- ছাত্রীকে এককালীন ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয় ।
আবেদন পত্র পাঠানোর ঠিকানা –
দক্ষিণবঙ্গের ছাত্র – ছাত্রীদের জন্য
The Assistant Secretary, Chief Minister’s Office, Nabanna , 325 Sarat Chatterjee Road, Howrah – 711 102
উত্তরবঙ্গের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য
Department of CMRF Scholarship, UTTARKANYA, New Satellite Township, Kamrangaguri, Fulbari, West Bengal- 734015
উক্ত স্কলারশিপে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস –
১. স্কলারশিপের ফর্ম।
২. শেষ পরীক্ষার মার্কশীট।
৩. বর্তমানে ছাত্র অথবা ছাত্রী যে কোর্সে অথবা শ্রেণীতে পড়াশোনা করছেন তাতে ভর্তির রশিদ।
৪. পৌরসভা/ BDO/ SM/ SDO/ গ্রুপ A অফিসারের তরফে জারি করা আবেদনকারী ছাত্র অথবা ছাত্রীর পরিবারের বাৎসরিক আয়ের সার্টিফিকেট।
৫. ছাত্র কিংবা ছাত্রীর ব্যাংকের পাস বইয়ের জেরক্স কপি।
৬. সেলফ ডিক্লারেশন ফর্ম।
৭. ছাত্র অথবা ছাত্রীর ফোন নম্বর, ইমেইল এড্রেস।
৮. আবেদনকারী শিক্ষার্থী যে এলাকায় বসবাস করছেন সেই এলাকার এমপি অথবা MLA দ্বারা জারি করা রেকমেন্ডেশন লেটার।
এবার আসি ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ সম্পর্কে –
প্রথমেই জেনে নেব এই স্কলারশিপের আবেদন পদ্ধতি সম্পর্কে —
উক্ত স্কলারশিপ বা বৃত্তি প্রদানের জন্য আবেদনের বিষয়ে অধ্যয়নরত স্কুল কিংবা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ছাত্র- ছাত্রীকে অবগত না করলে সরকারি ওয়েব সাইটে https://wbmdfcscholarship.org এ ঢুকে আবেদন করা যাবে। উল্লেখিত স্কলারশিপে আবেদনের জন্য গত বছরের নভেম্বর মাস থেকেই নিজস্ব ওয়েবসাইট চালু করেছে রাজ্য সরকার। চালু করা ওই ওয়েবসাইটে ঢুকে আবেদন করা যাবে সহজেই। পাশাপাশি চলতি আর্থিক বছরে রাজ্য বাজেটে এই খাতে ব্যয়ের ক্ষেত্রে বাড়তি টাকাও বরাদ্দ করা হয়েছে বলে অর্থ দফতর সুত্রে খবর।
প্রথমে আবেদনকারী প্রার্থীকে সরকারি ওয়েব সাইটে গিয়ে আবেদন ফর্ম ডাউন লোড করতে হবে তারপর ওই ফর্মে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।
আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর প্রার্থীর পরিবারের বার্ষিক আয়ের পরিমান হতে হবে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই তার পরিবারের বার্ষিক আয়ের প্রমান পত্র জমা করতে হবে।
এ ছাড়াও আবেদনের সময় প্রার্থীকে তার ব্যাংকের পাশ বইয়ের যাবতীয় তথ্য দিতে হবে সংশ্লিষ্ট স্কলারশিপের টাকা পাওয়ার সুবিধার্থে।
এক্ষেত্রে স্কলারশিপ বা বৃত্তিকে টাকার অঙ্কে প্রথম শ্রেনি থেকে স্নাতক পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন,
১. একেবারে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের দেওয়া হবে বার্ষিক ১ হাজার ১০০ টাকা
২. ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেনি পর্যন্ত বছরে দেওয়া হবে ৫ হাজার ৫০০ টাকা
৩. একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া দের দেওয়া হবে ১০হাজার ২০০ টাকা
৪. টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল কোর্সে পাঠরত পুডুয়ারা পাবেন বছরে ১৩হাজার ৫০০ টাকা
৫. স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পাঠরত ছাত্র ছাত্রীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে দেওয়া হবে স্কলারশিপ যেমন ৬০ শতাংশের কম নম্বর পেলে দেওয়া হবে বছরে ৬ হাজার ৬০০ টাকা এবং ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেলে দেওয়া হবে বছরে ১২ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা।
৬. ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ওই একই পদ্ধতিতে দেওয়া হবে যথাক্রমে ২৭ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বার্ষিক ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
Nabanna Scholarship Application Form – Click Here
Uttar Kanya Scholarship Application Form – Click Here
Self Declaration Form – Click Here
MLA Recommendation Form – Click Here