শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপের টাকা: কেন্দ্র থেকে মিললনা শিক্ষাক্ষেত্রের সাহায্য। অর্থ দফতরের অনুমোদন থাকা সত্বেও ১০০০ কোটি বরাদ্দ হয়নি বাংলার। সাধারনত কেন্দ্র থেকে প্রতি রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ অঙ্কের পরিমান নির্দিষ্ট থাকে। এবারে বাংলাতে শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ হয়েছে ১০০০ কোটি টাকা। কিন্তু সমগ্র শিক্ষা মিশনের গৃহীত অর্থ আটকে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। দাবি একটাই, পিএমশ্রীকে সমগ্র শিক্ষা মিশনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে, আর যার ফলেই কেন্দ্রের তরফে টাকা মিলবে।
কেন্দ্র সরকার আটকে দিয়েছে রাজ্যের শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপের টাকা
শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা স্থগিত থাকবে কারন হিসেবে কেন্দ্র জানায়, পিএমশ্রীকে সমগ্র শিক্ষা মিশনের সঙ্গে যুক্ত করলেই ১০০০ কোটি টাকা মিলবে। কিন্তু এর তীব্র বিরোধীতা করে বাংলা সরকার। ২২ ও ২৭ শে মার্চ দুবারেই বাংলা থেকে আধিকারিক কেন্দ্রীয় সরকারের দফতরে পাঠানো হয়, কিন্তু তাদের ফেরত পাঠানো হয় কেননা পিএমশ্রী কে শর্তসাপেক্ষ ভাবে সমগ্র শিক্ষা মিশনের সঙ্গে জুড়তে হবে। তবে বাংলার প্রাপ্য অর্থ কেন এখনও অনুমোদন পায়নি তা নিয়ে মুখ্যসচিব, শিক্ষাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী দিল্লিতে চিঠি দিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলার শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবিষয়ে চরম বিরোধিতা জানিয়েছেন। এবিষয়ে ব্রাত্য বসু জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের এহেন সিদ্ধান্ত যথেষ্ট বেআইনি ও স্বেচ্ছাচারিতার পরিচয়। কেননা অর্থ মন্ত্রক ও শিক্ষা মন্ত্রকের অনুমোদন সত্বেও কী অধিকারে টাকা আটকায় শিক্ষা মন্ত্রক? রাজনৈতিক স্বার্থ ও উদ্দেশ্য চরিতার্থের কারনেই কেন্দ্রীয় সরকারের এরকম চাল।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক পাস যোগ্যতায় ভারতীয় রেল গ্রুপ ডি নিয়োগ
*কত কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র?
এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, সমগ্র শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনে চলতি শিক্ষা বর্ষের জন্য মোট অর্থ ধার্য হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫০০ কোটি টাকার অনুদান মিললেও মেলেনি ১০০০ কোটির হিসেব। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, সমগ্র শিক্ষা মিশনকে পিএমশ্রী এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
*PMশ্রী কী? (What is PM Shri)
সাধারনত প্রত্যেক প্রকল্পের খাতেই কেন্দ্র ও রাছ্য সরকারের অনুদানের পরিমান থাকে ৬০:৪০। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার সমগ্র দেশ জুড়ে বিভিন্ন সরকারি স্কুল স্থাপনের উদ্যোগ নিলেও স্কুলগুলির নামের আগে যুক্ত হবে পিএমশ্রী। আর এটি নিয়ে প্রতিবাদ করেছে বাংলা। কেননা সেক্ষেত্রে বাংলার ৪০% অনুদান থাকছে কিন্তু কেন শুধু প্রধানমন্ত্রীর নামেই হবে? শুধু বাংলা নয়, এই দাবি নিয়ে আরও দুটি রাজ্য প্রতিবাদ করেছে – ওড়িশা ও তামিলনাড়ু। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নৈতিক বিবাদে আছে কেন্দ্রীয় সরকার।অন্যদিকে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের বক্তব্য, কেন্দ্র সরকার স্কুল তৈরী করতে চাইছে অবশ্যই ভালো কথা, কিন্তু তাতে কেন প্রধানমন্ত্রীর নামের উল্লেখ থাকবে? কোন স্কুল তো রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের যৌথ উদ্যোগেই নির্মান হয়। এটি নির্বাচনের আগে প্রচারের উদ্দেশ্যমাত্র। তা সত্বেও এটাই বলার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে স্কুল নির্মান হলে তা আদতে বাংলার ছাত্রছাত্রীদেরই ভালো হবে।উল্লেখ্য, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট ১৪ হাজার ৭০০ টি স্কুল নির্মানের লক্ষ্য স্থির হয়েছে। উদ্দেশ্য এটাই, সর্বস্তরের ছাত্রছাত্রীদের কাছে শিক্ষার আলো পৌছে দেওয়া ও শিক্ষা যথাযথ মানোন্নয়ন করা।