আর জি কর হামলায় গ্রেপ্তার 24 জন: গত 14ই আগস্ট রাত্রে 11টার সময় কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে, যেখানে অভয়ার সাথে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল 9 এবং 10 আগস্ট রাত্রে, সেখানেই 8 থেকে 80 প্রায় সকল বয়সের মেয়েরাই, শুধু মেয়েরা বললে ভুল হবে নারী পুরুষ সবাই ওই রাত্রে হাসপাতাল দখল অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিল।
সেই রাত্রেই আন্দোলনকারী মহিলাদের ওপর আক্রমণ করে আর জি করের ওই সেমিনার রুমে হামলাকারীরা হামলা চালায়, বিশেষত প্রমাণ লোপাটের জন্যই মনে করা হচ্ছে এই হামলা চালানো হয়েছে।
সেই হামলা হওয়ার পর 24 জন ব্যক্তিকে আপাতত গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ওই 24 জনের মধ্যে 1 জন আবার মহিলাও ছিলেন। যে নাকি আবার অভয়ার সাথে কাজ করা তারই কলিগ ডাক্তার। সেই রাত্রি অর্থাৎ 9 এবং 10 আগস্ট রাত্রে যেদিন অভয়ার ওপর ওই জানোয়ার গুলো হামলা করেছিল সেমিনার রুমে সেদিন ওই মহিলা কলিগ ডাক্তার ওই দুঃখজনক এবং নৃশংস ঘটনা চলাকালীন সারাক্ষণ নাকি অভয়ার হাত চেপে ধরেছিল।
হয়তো অভয়া চোখের ভাষায় যতক্ষণ তার দেহে প্রান ছিল ততক্ষণ সে ওই কলিগ ডাক্তার কে বোঝাবার চেষ্টা করছিল, যে তুমিও তো একজন মেয়ে, আমাকে ছেড়ে দাও, আমি বাঁচতে চাই । তবে যাই হোক অভয়াকে তো আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়, আমরা একদম মনে প্রাণে চেষ্টা করবো যেন ওই নৃশংস জানোয়াররুপি মানুষ গুলোর উপযুক্ত শাস্তি হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ওই 24 জন নাম ও বয়স ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশ প্রকাশ করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ওই 24 জন ব্যক্তিরা হলো –
- অশোকপুরের চিরাগ ঘাগারিয়া (23)
- বারতলার অভিজিৎ সাউ (24)
- মানিকতলা শুভদীপ কুণ্ডু (22)
- চিৎপুরের ঋতিকান্ত মিশ্র (35)
- বারতলার করসিনি রাজগুপ্ত (34)
- দক্ষিণেশ্বরের শান্তনু সরকার (25)
- মানিকতলার মুরারিপুকুর রোডের সৌরভ দে (23)
- উল্টোডাঙ্গা দেবাশীষ মন্ডল (29)
- নিমতার সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য (31)
- ফুলবাগানের প্রদীপ সেন (22)
- মানিকতলার মানস কুমার বিশ্বাস (24)
- জোড়াসাঁকোর পল ঘোষ (29)
- নিমতার অভিজিৎ বেরা (29)
- ক্ষুদিরাম বোস সরণির মোহাম্মদ আসলাম (19)
- চিৎপুরের রোহিত বারুই (24)
- নাগেরবাজারের সৌমিক দাস (24)
- উল্টোডাঙ্গা সুরজিৎ কর্মকার (34)
- মানিকতলার সৌম্যদীপ মাহিষ (22)
- লেকটাউনের শেখ সজন (28)
- উল্টোডাঙ্গা সুরজিৎ কর্মকার (34)
- রাজু বাগ (28)
- নবীন সিংহ (21)
- উল্টোডাঙ্গার শান্তনু ঘোষ (24)
- এবং যে মহিলাটি সঙ্গে যুক্ত ছিল সে হলো
- বরাহনগর এর বাসিন্দা রুমা দাস (27)।
এই নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন রাত্রে অর্থাৎ 14ই আগস্ট রাত্রে আর জি কর হামলা হয়েছিল সেটা সঠিক তথ্য কিন্তু এখনো পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সেটা তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও জানিয়েছেন যে, হামলা কারীদের আসল উদ্দেশ্য কি ছিল ? আদৌ হামলাকারীরা সেমিনার হলে যেতে চেয়েছিল কিনা সে বিষয়ে কিন্তু এখনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি? তবে তদন্ত শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।
কিন্তু সাধারণ মানুষ মনে করছে যে এটা প্রমাণ লোপাটের জন্যই হামলা হয়েছিল। এছাড়াও হসপিটাল কর্তৃপক্ষ ওই অত বড় নৃশংস ঘটনা ঘটে যাওয়ার দু চার দিনের মধ্যেই কেন ওই সেমিনার হলের পাশে কন্ট্রাকশনের কাজ করতে লাগলো। সেটা সম্বন্ধে কোনো রকম সঠিক উত্তর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
আপাতত অভয়ার এই নৃশংস মৃত্যুর রহস্যের কেসটা কলকাতা পুলিশের হাতে আর নেই, সেটা আপাতত Central Bureau of Investigation অর্থাৎ CBI এর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। CBI ইতিমধ্যে আরজি কর মেডিকেল হসপিটালে প্রাক্তন অধ্যাপক সন্দীপ ঘোষকেও গ্রেপ্তার করে নিয়েছে । কেননা, যতদূর মনে করা হচ্ছে এই ব্যক্তিই হচ্ছে সবার মাথা।
এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গিয়েছে যে, এই সন্দীপ ঘোষ নামক মানুষরূপী দানবটা এর আগেও প্রচুর খারাপ খারাপ কাজে যুক্ত ছিলেন। এখন শুধুমাত্র সিবিআই এর দিকে অপেক্ষায় যে রয়েছেন সাধারণ জনগণ, যে তারা কতটা সুরাহা করতে পারছে।
এর পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদে মহিলারা মোমবাতি মিছিল ইত্যাদি করছে। যাতে অভয়ার সাথে ঘটে যাওয়া এরপরে বাংলার আর কোনো আর কোনো মা বোনের সাথে না ঘটে এবং মেয়েরা এই মিছিলের মাধ্যমে অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ এবং ওই ঘটনাকে আমি দুঃখ থাকার সমস্ত মানবরূপী দানবগুলো শাস্তির জন্য আবেদন জানাচ্ছে।
এর পাশাপাশি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতেও বিভিন্ন জায়গায় মিছিল বেরোচ্ছে। কেননা এই মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সাধারণ জনগণ বুঝতে পেরেছে যে বাংলার মা বোনেরা একটুকুও সুরক্ষিত নেই।
কেননা এই ঘটনা ঘটার মাত্র পাঁচ দিন পর মমতা ব্যানার্জি একটা প্রেস কনফারেন্স এর মাধ্যমে বলেন যে, “মেয়েটা তো আর ফিরে আসবেনা, তবে আমরা ওর পরিবারকে অবশ্যই 10 লক্ষ টাকার দিতে পারি”। অর্থাৎ ওনার ভাষায় একটা মেয়ের শরীরের দাম 10 লক্ষ টাকা। তিনিও তো একজন মহিলা তিনি কিভাবে একথা সবার সামনে বলতে পারলেন? এটাই ভাববার বিষয়। তবে যাই হোক বাংলা সমস্ত সাধারণ জনগণের সাথে আমাদেরও আর যে রইলো যে দোষী সমস্ত ব্যক্তি যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়। ধন্যবাদ।